গীতা মতে আমাদের সম্বোধন কি হওয়া উচিৎ
উত্তর -! চলুন গীতার অর্জুন উবাচ দিয়ে শুরু করি-
।
"কস্মাচ্চ তে ন নমেরন্ মহাত্মন্ ... (গীতা 11.37)
অর্থাৎ হে মহাত্মা, কেন আপনাকে তারা নমষ্কার করবে?"
"নমো নমস্তেহস্তু সহস্রকৃত্বঃ পুনশ্চ ভূয়োহপি নমো নমস্তে। (গীতা 11.39)
অর্থাৎ আপনাকে পুনঃ পুনঃ নমষ্কার, সহস্রবার নমষ্কার পুনরায়ও আবারও নমষ্কার।"
"নমঃ পুরস্তাদথ পৃষ্ঠতস্তে নমোহস্তু তে সর্বত এব সর্ব .. (গীতা 11.40)
অর্থাৎ আপনার সামনে পেছনে নমষ্কার, আপনার সবদিকেই নমষ্কার।"
।
যেখানে অর্জুনও গীতাতে শুধুমাত্র নমষ্কার দিয়েছেন বারংবার সেখানে আজকের তথাকথিত কৃষ্ণ ভক্তরা কথায় কথায় হরে কৃষ্ণ, রাধে কৃষ্ণ বা রাধে শ্যাম বলাটা ছাগল পাগলের লক্ষণ নয় ? কেননা বেদ, উপনিষদ, গীতা, মনুসংহিতা, বেদান্ত সূত্র ইত্যাদির কোথাও হরে কৃষ্ণ বা রাধে কৃষ্ণ বা রাধে শ্যাম নামক কোন শব্দের নাম গন্ধও নেই । তাই যে সকল লোকে বলে অমুক তমুক জায়গায় এগুলো বলে বা বলার বিধান আছে তাদেরকে সনাতন ধর্মাবল্মী বলাই উচিত নয় । কারণ এরা সনাতনীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টিকারী কুচক্রী ও ধর্ম ব্যবসায়ী ।
।
চলুন নমস্কার সম্বন্ধে কিছু তথ্য জেনে নেই।বৈদিক শাস্ত্রে 'মুদ্রা' হল হাতের বা দেহের বিশেষ একটি অবস্থান। নাট্যশাস্ত্রে ২4 প্রকার মুদ্রার বর্ননা করা হয়েছে। দুই হাত জোড় করার এই বিশেষ মুদ্রাটির নাম হল 'অঞ্জলী মুদ্রা'।এটির দুটো ব্যবহার-
1) দেখলে অভিবাদন জানাতে যখন এটি ব্যবহার করা কাউকে হয় তখন একে বলা হয়
নমস্কার।
২) সান্ধ্য উপাসনার শেষ ধাপে যখন ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য বৈদিক করে এই মুদ্রা করা হয় একে তখন বলে
প্রনাম-আসন।
।
মূলত শব্দটি হল 'নমস্তে' যার বাংলা রুপ হল নমস্কার। 'নম' শব্দের অর্থ হল নত হওয়া বা শ্রদ্ধা / সম্মান প্রদর্শন করা, এর সাথে 'তে' ধাতু যুক্ত। তে এর অর্থ তোমাকে, অর্থাৎ নমস্তে অর্থ হল তোমার প্রতি রইল শ্রদ্ধা।
।
ভারতের বিভিন্ন প্রাচীন মন্দিরে এবং প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনে শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরামচন্দ্র সহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ত্বের নমস্কাররত অবস্থায় খচিত নকশা পাওয়া যায় । আপস্তম্ব ও বৌধায়ন সুত্রেও অভিবাদনের নিয়ম হিসেবে নমস্কার দেবার কথা পাওয়া যায় । পবিত্র বেদে অনেকবার ই নমস্তে তথা নমস্কার প্রদানের উল্লেখ পাওয়া যায় ।
।
"নমস্তে স্ত্বায়তে নমো অস্তু পরায়তে। নমস্তে রুদ্র তিষ্ঠতে আসীনাযোত তে নমঃ ..
অথর্ববেদ 11.২.15।
অনুবাদ- নমস্কার তোমায় (কেননা) আমাদেরকে দেয়া চৈতন্যের জন্য, হে রুদ্র তোমায় নমস্কার কেননা তুমিই এই বিবেকরুপে আমাদের মাঝে অবস্থান কর ! "
।
আরেকটি মন্ত্র কৃষকদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে বলছে-
" নমস্তে লাঙ্গলেভ্যো নম ... বিরুত্ক্ষে ত্রিযনাশন্যপা ...
(অথর্ববেদ ২ .8.4)
অর্থাৎ যারা লাঙ্গল ও চাষের মাধ্যমে জমিতে ফসল ফলান তাদের জানাই নমস্কার । "
।
অভিবাদনরুপে নমস্কার প্রদানের উৎকৃষ্ট উদাহরন যজুর্বেদের িম্নলিখিত মন্ত্রটি-
"নমো জ্যেষ্ঠায় চ কনিষ্ঠায় চ নমং পূর্বজায় চাপরজায চ নমো মধ্যমায় চাপগল্ভায় চ নমো জঘন্যায় চ বুধ্ন্যায় চ ..
যজুর্বেদ 16.3২।
অনুবাদ-নমস্কার জ্যেষ্ঠদেরকে, নমস্কার কনিষ্ঠদেরকে, নমস্কার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ধনী- গরীব, জ্ঞানী, স্বল্পজ্ঞানী সকলকে! "
।
অর্থাৎ এ থেকে আমরা জানতে পারি যে নমস্কার এমনই এক অনন্য অভিবাদন যাতে ধনী -গরীব, ছোট-বড়, শিক্ষিত-অশিক্ষিত ভেদ নেই। যে কেউই এটা যে কাউকে দিতে পারে।আমাদের বৈদিক ঋষিগন সকলেই নমস্কার দিয়ে অভিবাদন জানাতেন, শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ সকলেই নমস্তে ব্যবহার করতেন অভিবাদন জানাতেন। আর তারই ভক্তরুপ ব্যক্তিগন আজ হিন্দুসমাজে নিয়ম চালু করছে নমস্কার না বলে'হরে কৃষ্ণ' ইত্যাদি নিজেদের বানানো কথা বলে। অথচ শ্রীকৃষ্ণ নিজেও তাঁর ভক্তদেরকে নমস্কার বাদ দিয়ে 'হরে কৃষ্ণ' বলতে বলেননি।শেষ করবো ঈশ্বরকে নমষ্কার মন্ত্রঃ দিয়ে-
।
"নমঃ শম্ভবায় চ ময়োভবায় চ নমঃ শঙ্করায় ওম্
চ ময়স্করায় চ নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।"
যজুর্বেদ 16.41।
।
"কস্মাচ্চ তে ন নমেরন্ মহাত্মন্ ... (গীতা 11.37)
অর্থাৎ হে মহাত্মা, কেন আপনাকে তারা নমষ্কার করবে?"
"নমো নমস্তেহস্তু সহস্রকৃত্বঃ পুনশ্চ ভূয়োহপি নমো নমস্তে। (গীতা 11.39)
অর্থাৎ আপনাকে পুনঃ পুনঃ নমষ্কার, সহস্রবার নমষ্কার পুনরায়ও আবারও নমষ্কার।"
"নমঃ পুরস্তাদথ পৃষ্ঠতস্তে নমোহস্তু তে সর্বত এব সর্ব .. (গীতা 11.40)
অর্থাৎ আপনার সামনে পেছনে নমষ্কার, আপনার সবদিকেই নমষ্কার।"
।
যেখানে অর্জুনও গীতাতে শুধুমাত্র নমষ্কার দিয়েছেন বারংবার সেখানে আজকের তথাকথিত কৃষ্ণ ভক্তরা কথায় কথায় হরে কৃষ্ণ, রাধে কৃষ্ণ বা রাধে শ্যাম বলাটা ছাগল পাগলের লক্ষণ নয় ? কেননা বেদ, উপনিষদ, গীতা, মনুসংহিতা, বেদান্ত সূত্র ইত্যাদির কোথাও হরে কৃষ্ণ বা রাধে কৃষ্ণ বা রাধে শ্যাম নামক কোন শব্দের নাম গন্ধও নেই । তাই যে সকল লোকে বলে অমুক তমুক জায়গায় এগুলো বলে বা বলার বিধান আছে তাদেরকে সনাতন ধর্মাবল্মী বলাই উচিত নয় । কারণ এরা সনাতনীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টিকারী কুচক্রী ও ধর্ম ব্যবসায়ী ।
।
চলুন নমস্কার সম্বন্ধে কিছু তথ্য জেনে নেই।বৈদিক শাস্ত্রে 'মুদ্রা' হল হাতের বা দেহের বিশেষ একটি অবস্থান। নাট্যশাস্ত্রে ২4 প্রকার মুদ্রার বর্ননা করা হয়েছে। দুই হাত জোড় করার এই বিশেষ মুদ্রাটির নাম হল 'অঞ্জলী মুদ্রা'।এটির দুটো ব্যবহার-
1) দেখলে অভিবাদন জানাতে যখন এটি ব্যবহার করা কাউকে হয় তখন একে বলা হয়
নমস্কার।
২) সান্ধ্য উপাসনার শেষ ধাপে যখন ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য বৈদিক করে এই মুদ্রা করা হয় একে তখন বলে
প্রনাম-আসন।
।
মূলত শব্দটি হল 'নমস্তে' যার বাংলা রুপ হল নমস্কার। 'নম' শব্দের অর্থ হল নত হওয়া বা শ্রদ্ধা / সম্মান প্রদর্শন করা, এর সাথে 'তে' ধাতু যুক্ত। তে এর অর্থ তোমাকে, অর্থাৎ নমস্তে অর্থ হল তোমার প্রতি রইল শ্রদ্ধা।
।
ভারতের বিভিন্ন প্রাচীন মন্দিরে এবং প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনে শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরামচন্দ্র সহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ত্বের নমস্কাররত অবস্থায় খচিত নকশা পাওয়া যায় । আপস্তম্ব ও বৌধায়ন সুত্রেও অভিবাদনের নিয়ম হিসেবে নমস্কার দেবার কথা পাওয়া যায় । পবিত্র বেদে অনেকবার ই নমস্তে তথা নমস্কার প্রদানের উল্লেখ পাওয়া যায় ।
।
"নমস্তে স্ত্বায়তে নমো অস্তু পরায়তে। নমস্তে রুদ্র তিষ্ঠতে আসীনাযোত তে নমঃ ..
অথর্ববেদ 11.২.15।
অনুবাদ- নমস্কার তোমায় (কেননা) আমাদেরকে দেয়া চৈতন্যের জন্য, হে রুদ্র তোমায় নমস্কার কেননা তুমিই এই বিবেকরুপে আমাদের মাঝে অবস্থান কর ! "
।
আরেকটি মন্ত্র কৃষকদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে বলছে-
" নমস্তে লাঙ্গলেভ্যো নম ... বিরুত্ক্ষে ত্রিযনাশন্যপা ...
(অথর্ববেদ ২ .8.4)
অর্থাৎ যারা লাঙ্গল ও চাষের মাধ্যমে জমিতে ফসল ফলান তাদের জানাই নমস্কার । "
।
অভিবাদনরুপে নমস্কার প্রদানের উৎকৃষ্ট উদাহরন যজুর্বেদের িম্নলিখিত মন্ত্রটি-
"নমো জ্যেষ্ঠায় চ কনিষ্ঠায় চ নমং পূর্বজায় চাপরজায চ নমো মধ্যমায় চাপগল্ভায় চ নমো জঘন্যায় চ বুধ্ন্যায় চ ..
যজুর্বেদ 16.3২।
অনুবাদ-নমস্কার জ্যেষ্ঠদেরকে, নমস্কার কনিষ্ঠদেরকে, নমস্কার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ধনী- গরীব, জ্ঞানী, স্বল্পজ্ঞানী সকলকে! "
।
অর্থাৎ এ থেকে আমরা জানতে পারি যে নমস্কার এমনই এক অনন্য অভিবাদন যাতে ধনী -গরীব, ছোট-বড়, শিক্ষিত-অশিক্ষিত ভেদ নেই। যে কেউই এটা যে কাউকে দিতে পারে।আমাদের বৈদিক ঋষিগন সকলেই নমস্কার দিয়ে অভিবাদন জানাতেন, শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ সকলেই নমস্তে ব্যবহার করতেন অভিবাদন জানাতেন। আর তারই ভক্তরুপ ব্যক্তিগন আজ হিন্দুসমাজে নিয়ম চালু করছে নমস্কার না বলে'হরে কৃষ্ণ' ইত্যাদি নিজেদের বানানো কথা বলে। অথচ শ্রীকৃষ্ণ নিজেও তাঁর ভক্তদেরকে নমস্কার বাদ দিয়ে 'হরে কৃষ্ণ' বলতে বলেননি।শেষ করবো ঈশ্বরকে নমষ্কার মন্ত্রঃ দিয়ে-
।
"নমঃ শম্ভবায় চ ময়োভবায় চ নমঃ শঙ্করায় ওম্
চ ময়স্করায় চ নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।"
যজুর্বেদ 16.41।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন