ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৈশোর আর যৌবনকে আরও নীচে নামিয়ে এনেছি।

সমগ্র যুবসমাজের কাছে হাসির খোরাক করে তুলেছি ভগবানকে।যাত্রা-নাটক-সিনেমা-সর্বত্র এখন কৃষ্ণকে নিয়ে ফাজলামো হয়।
দোষ যুবকদের নয়, কৃষ্ণভক্তদের😒। কৃষ্ণের কৈশোর আর যৌবনকে আমরা গত ৫০০ বছর ধরে এমনভাবে তুলে ধরেছি যেন, কৃষ্ণ একটা লম্পট।যার চরিত্র বলে কিছু ছিল না। যার প্রধান কাজ ছিল মেয়েদের সঙ্গে ফূর্তি করা।স্নানের ঘাটে মেয়েদের কাপড় চুরি,পরের বউকে নিয়ে টানাটানি,লুকিয়ে তার সঙ্গে ক্রীড়া😡।
হ্যাঁ এভাবেই উপস্থাপিত করেছি কৃষ্ণকে😔। যা সত্যের একেবারে বিপরীত। চরম এবং চূড়ান্ত মিথ্যাকথাগুলিকে শ্রীকৃষ্ণের জীবনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। 😒
ভগবানের লীলা বলে এই কাজকে সমর্থনও করা হয়। ছোট থেকে বড় এখন, সবাই আমরা সেই প্রভাবে প্রভাবিত।পথে ঘাটে স্কুলে কলেজে
সর্বত্র এসব নিয়ে হাসিঠাট্টা।আমরা শুনি কৃষ্ণভক্তরাও শোনে।
হজম করতে হয়,কারণ ভণ্ডামি ঢাকতে এসব হজম করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কোন
ছেলে যদি তার বান্ধবীদের সঙ্গে গল্প করে অমনি আমরা বলি–"কিহে তুমি তো কলির কেষ্ট?"। এগুলো পরিচিত বাক্যবন্ধনী, অনেকেই শুনি, অনেকেই বলি।একবারও ভাবি না কি বলছি, কেন বলছি! 😒
একথা বলে কি আমরা এগুলোই বোঝাতে চাই যে, মেয়েদের সঙ্গে বসে গল্প করা ছাড়া আর তার কোনও কাজ ছিলো না😒। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে কৃষ্ণভক্ত বলি না। ভও ভক্তরা বলেন "প্রেমময়ের লীলা"।
স্বর্গে কি অপ্সপার অভাব ছিল?
মর্তে আসতে হলো মেয়েদের সঙ্গে গল্প করার জন্য?😡
কিছুতেই সত্য স্বীকার করব না।আমাদের হাড়ে মজ্জায় শিরায় শিরায় এই ন্যাকামি চলছে দীর্ঘকাল ধরে। তাই সিনেমা,নাটক,গান, সর্বত্র
কৃষ্ণের কৈশোর যৌবনকে নিয়ে চূড়ান্ত ছ্যাবলামো চলছে বিকৃতভাবে গাওয়া,হচ্ছে ভজ গৌরাঙ্গ😝সিনেমায় গোফধারীকৃষ্ণ কুঞ্জবনে বসে বসে সিগারেট ফুকছে আর রাধাকে চুমো খাচ্ছে😂।
এসব দেখে কোনও কৃষ্ণভক্ত প্রতিবাদ করেন না। কারণ নপুংসকেরা প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। লাগাতার ভণ্ডামো মানুষকে কাপুরুষ করে তোলে। নিজেদের এই বীর্যহীনতা আর মিথ্যাচারিতাকে সমর্থনের জন্য হাজার যুক্তি আসলে সত্যের মুখোমুখি হতে হলে সাহসী হতে হবে,বীর্যবান হতে হবে,নির্ভীক হতে হবে।
আমরা অসৎ😔আমাদের বেশিরভাগের চরিত্র দুর্বল। তাই বীর্যবান তেজস্বী কৃষ্ণও আমাদের পছন্দ নয়। আমরা আমাদের ভগবানকেও আমাদের মতো বানিয়ে নিয়েছি। নিজেদের অবদমিত ইচ্ছাগুলো চাপিয়ে দিয়েছি ভগবানের উপর😞। নিজেরা মেয়েদের চান করা দেখতে গেলে লোকে ঠ্যাঙাবে😂 তাই ভগবানকে দিয়ে দেখিয়েছি😡।
পরের বউ এর সাথে প্রেম করলে ধরা পরার ভয়, ভগবানের প্রেম বলে চালিয়ে দিচ্ছি😂। বয়সকালে একটা মানসিক তৃপ্তিতো পাওয়া যাচ্ছে😀 ভক্তিও হলো 🙏আবার তৃপ্তিও হলো।😂
এমন বাড়ি খুব কমই আছে যেখানে রাধাকৃষ্ণের ছবি নেই😊। রাধাকৃষ্ণের যুগল মূৰ্তি তে প্রায় সব বাঙালি বাড়িতে শিখিপুস্থধারী বাশিধারীকৃষ্ণের পাশে রাধা। এ ছবি আমাদের চিরচেনা। এখনতো এমন অনেক সংগঠন আছে যারা কৃষ্ণের থেকে রাধাকে বেশি গুরুত্ব দেন। আমরা যদি গালগল্প ভালো না বাসতাম তাহলে কখনই এগুলো সম্ভব হতো না। তমাল তলায় কৃষ্ণ রাধাকে নিয়ে দোল খাচ্ছে এটা ভাবতে ভালো লাগে, কিন্তু যুক্তিতে টেকে না।
একবারও ভাবিনা কৃষ্ণের গোটা যৌবনটা যদি রাধাকে নিয়ে দোল খেতে খেতে কেটে গেল তাহলে এত যুদ্ধবিগ্রহ, কংস, শিশুপাল, জরাসন্ধবধ, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধপরিচালনা এসব কখন করলেন?
দুটো চরিত্রকে মেলানো যাবে কি ভাবে,যার জন্ম দুস্কৃতিদের বিনাশ আর সাধুদের পরিত্রাণের জন্য,
তিনি রাধা নামের এক পরস্ত্রীকে নিয়ে তমালগাছে দোল খাবেন এতো অতি বড় কষ্টকল্পনা?তবুও
আমাদের ছেলেমেয়েদের মন থেকে কৃষ্ণের সেই তেজস্বী রূপটাকেই মুছে দিতে পেরেছি, আমাদের দীর্ঘদিনের ভণ্ডামো আর মিথ্যাচারিতা দিয়ে। দাদের ধারে ধারে চুলকেও তৃপ্তি।
ছিঃ ধিক্কার!
আজকে এ পর্যন্তই।
সামনে আবারো আসছি।
লেখক #অর্পণ আর্য

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাণী চার প্রকার

বৈদিক পঞ্চ মহাযজ্ঞ

ঋগ্বেদ রাত্রিসূক্তঃ