কালতত্ত্ব কি?
।।ও৩ম্।।
প্রশ্নঃ নিরাকার ঈশ্বর কিভাবে সৃজন করে?? কাল রশ্মি কি ও তার বিজ্ঞান ক্রিয়া কি??
উত্তরঃ সৃষ্টির কনায় কনায়, স্পেসে কালই কার্য করে থাকে। কালরশ্মি প্রকৃতিতে সমাহিত থাকে। সৃষ্টির প্রথম স্টেপে কালরশ্মি(পরা ওম্ রশ্মি) প্রকৃতির গুনসমুহের সাম্যবস্থা বিনষ্ট করে দেয়। কাল রশ্মি তথা ওম্ রশ্মি অনাদি। সর্বত্র বিদ্যমান থাকে। তিন কালেই কালের কোন পরিবর্তন হয় না। কাল করশ্মি তথা ওম্ রশ্মি প্রকৃতির গর্ভে মহতত্বের সৃজন করেন। মহতত্বের মাঝে পরা ওম্ তথা কাল রশ্মি কাজ করবার ফলে মহতত্ব মনস্তত্বে কনভার্ট হয়ে যায়। কাল রশ্মি পশ্যন্তি ওম্ রশ্মিকে প্রেরণ করে পশ্যন্তি ওম্ রশ্মি সাত মহা ব্যাহৃত রশ্মিকে প্রেরনা করে থাকে। উক্ত সাত রশ্মির প্রভাবে মনস্তত্বের মধ্যে দশ প্রাণরশ্মির নির্মান হয়ে যায়। উক্ত দশ প্রকারের প্রাণরশ্মি কতৃক বিভিন্ন সকল বেদ মন্ত্রকেই মনস্তত্বের মাঝে উৎপন্ন করে। মরুত রশ্মি,ছন্দরশ্মি,প্রাণরশ্মি প্রভৃততি ফোটন,কার্ক,কোয়ান্টা,পার্টিকেল,
ইলিমেন্টারি পার্টিকেল,আয়ন অ্যাটম, এবং মলিকূল প্রভৃতি কালরশ্মি দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে। কাল রশ্মির প্রভাবে আস্তে আস্তে গ্যালাক্সি,নেবুলা,সূর্য,চন্দ, এবং বহু প্রকারের বলের নির্মান হতে থাকে। ঈশ্বর কালকে প্রেরণা করে কাল প্রকৃতিকে ডিষ্টার্ব করে প্রকৃতি মহতত্ব আদি অহংতত্ব এবং মনস্তত্বকে নির্মান করে বিভিন্ন প্রকারের বেদ ঋচার জন্ম দিয়ে থাকে। ছোট বড় বেদ ঋচা দ্বারা মনস্তত্ব পূর্ন হতে থাকে। মনস্তত্বের মাঝে উৎপন্ন ঋচাই হলো ফোর্স বা বৃহৎ বল। এই সকল বলের ও বল পরা ওম্ রশ্মি তথা কাল রশ্মি।
পরাওম্ তথা কাল রশ্মি সাধারণ নিমিত্ত কারণ।বলে জানিও।
ওম্ রশ্মি নিয়ে অথর্ববেদে একটি সূক্ত আছে যেখানে কালের তথা পরা ওমের বিশদ ভাবে ৭ বিশেষন ব্যক্ত করা হয়েছে-
ঋষিঃ ভৃগু /দেবতা কাল /ছন্দ ত্রিষ্টুভ।
কালো অশ্বো বহতি সপ্তরশ্মিঃ সহস্ত্রাক্ষো অজরো ভূরিরেতাঃ।
তমা রোহন্তি কবয়ো বিপশ্চিৎ সপ্ত চক্রা ভূবনানি।।
(অথর্ব ১৯/৫৩/১)
মন্ত্রপদার্থের অর্থঃ
(১) সহস্রাক্ষ-কালের হাজর অক্ষ। অক্ষ শব্দের অর্থ অক্ষর। প্রকৃতি অক্ষর রূপই হয়। প্রকৃতির মাঝে শায়িত থাকে সহস্র অক্ষর। যাহা স্বর এবং ব্যঞ্জন অক্ষর রশ্মিরূপে সৃষ্টি হয়ে থাকে।
(২) সপ্তরশ্মিঃ-কাল রশ্মি জতে জন্ম নেয় সাত প্রকারের মহাব্যাহৃত রশ্মি। ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ মহঃ জনঃ তপঃ সত্যঃ। উহারা কাল রশ্মি তথা পরা ওম রশ্মি দ্বারা প্রেরিত হয়ে কার্য করতে থাকে। (নিরুক্ত ৪/২৬ সপ্ত সংখ্যা মহাব্যাহৃত রশ্মি)।। প্রথমে এ সকল বানী পরা অবস্থায় উৎপন্ন হয়।
(৩)অশ্ব- কাল তীব্রগামী। কাল রশ্মি মহতত্বের সকল স্থানে একসাথে কার্য করতে থাকে সর্বত্র স্পন্দন করে থাকে বলে কালের আরেক নাম অশ্ব।
(৪) অজর- কাল রশ্মি অনাদি অবিনাশী। কাল দ্বারা সকল সৃষ্টির নির্মান হয় তথাপি সৃষ্টি জীর্ণ হলে ও কাল রশ্মি জীর্ণ হয় না। তাই কাল অজর।
(৫)ভূরিরেতা- কাল রেতবান। কালের স্বভাব সৃষ্টি রচনা করা তাহা ধারণ করা এবং প্রলয় করা। কালই স্বয় অনেক প্রকারের পদার্থ উৎপন্ন করে থাকে। মহতত্ব হতে পৃথিবী,চন্দ্র,সূর্য পর্যন্ত কাল সৃষ্টি করে থাকে বলে কালের অারেক বিশেষন ভূরিরেতা।
(৬) সপ্ত চক্র- কাল পাচ প্রাণ রশ্মি এবং ধনঞ্জয় প্রাণ ও সূত্রাত্মার নির্মান করে বলে কালের বিশেষণ সপ্ত চক্র।
(৭) সপ্তনাভি- ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ মহঃ জনঃ তপঃ সত্যঃ আদি সাত রশ্মিই সপ্তনাভি বিশেষনে খ্যাত। ভূ রশ্মি পৃথিবীর নাভি, ভূবঃ রশ্মি আকাশের নাভি,স্বঃ রশ্মি সূর্য আদি প্রকাশিত লোকের নাভি। মহঃ সর্বলোকের নাভি। সর্বলোকে ইহার কার্য ক্ষেত্র বিস্তার ঘটে। এভাবে সাত রশ্মি নাভির ন্যায় কার্য করে বলে কালের আরেক বিশেষণ সপ্তনাভি।
কালেনোদেতি সূর্য়ঃ কালে নি বিশতে পুনঃ।।১।। (অথর্ব০ ১৯/৫৪/১)
পদার্থঃ (কালাত্) কাল দ্বারা (আপঃ) জল (সমভবন্) প্রকট হয়ে। (কালাত্) কাল দ্বারা (ব্রহ্ম) বেদ, (তপঃ) প্রতপ্ত সূর্য, আর (দিশঃ) দিমার প্রকট হয়। (কালেন) কাল দ্বারা (সূর্য়ঃ উদেতি) সূর্য উদিত উদিত হয়। (কালে) আর কালে (পুনঃ) আবার (নি বিশতে) প্রবেশ হয়ে যায়, অস্ত হয়ে যায়।।১।।
[আপঃ “তস্মাদ্বা এতস্মাদাত্মাদাত্মনঃ আকাশঃ সম্ভূতঃ। আকাশাদ্বায়ুঃ বায়োরাগ্নিরগ্নেরাপ অদভ্যঃ পৃথিবী” (উপনিষদ) এর অনুসার অগ্নি দ্বারা আপঃ প্রকট হয়ে। মন্ত্র ১৯, ৫৩, ১০ মধ্যে “তপঃ” দ্বারা অগ্নির উৎপত্তি দর্শায়, আর ১৯. ৫৪.১ মধ্যে “আপঃ” এর। এই ক্রম উপনিষদ দ্বারাও নির্দিষ্ট করে যায়। ব্রহ্ম=বেদ, দেখ (১৯.৫৩.৮)। দিশঃ=দিমার পরিজ্হান সূর্যাদয়ের দিমার দৃষ্টি দ্বারা হয়, এইজন্য তপঃ=প্রতপ্ত সূর্য।]
কাল রশ্মিই পরা ওম্ রশ্মি পরা ওম্ ই কাল রশ্মি।
ভাষ্যঃ আচার্ অগ্নিব্রত ন্যাষ্টিক
।।ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন