অথর্ববেদ বুদ্ধিসূক্তঃ
।। ও৩ম্।।
।।
।।ও৩ম্।।
অথর্ববেদ ১/১ বুদ্ধিসূক্ত
য়ে ত্রিষপ্তাঃ পরিয়ন্তি বিশ্ব রূপাণি বিভ্রতঃ।
বাচস্পতির্বলা তেষা তন্বো অদ্য দধাতু মে।। ১।।
মন্ত্রার্থঃ (য়ে) যে পদার্থ (ত্রি-সপ্তাঃ) ১-সবার সাধু, রক্ষক পরমেশ্বরের সম্বন্ধে যে, ২-রক্ষণীয় জগৎ [অথবা-তিন হইতে সম্বন্ধী ৩-তিন কাল-ভূত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ। ৪-তিন লোক, স্বর্গ, মধ্য আর ভূলোক। ৫-তিন গুণ স্বত, রজ আর তম। ৬-ঈশ্বর, জীব আর প্রকৃতি। অথবা তিন আর সাত=দশ। ৭-চার দিশা, চার বিদিশা, এক উপরে আর এক নিচের দিশা। ৮-পাঁচ জ্ঞান ইন্দ্রিয় অর্থাৎ কান, ত্বক,নেত্র জিহ্বা, নাসিকা আর পাঁচ কর্ম ইন্দ্রিয় অর্থাৎ বাক্, হাত, পা, পায়ু উপস্থ। অথবা তিন গুনিত সাত=একুশ। ৯- মহাভূত ৫+প্রাণ ৫+জ্ঞান ইন্দ্রিয় ৫+কর্ম ইন্দ্রিয় ৫+অন্তঃ করণ ১ ইত্যাদি] র সম্বন্ধে [বর্তমান] হয়ে (বিশ্বা=বিশ্বান) সব (রূপাণি) বস্তুকে (বিভ্রতঃ) ধারণ করতে থাকে (পরি) সব দিকে (য়ন্তি) ব্যাপ্ত আছে। (বাচস্পতিঃ) বেদরূপ বাণীর স্বামী পরমেশ্বর (তেষাম্) তাদের মধ্যে (মে) আমাদের জন্য (দধাতু) দান করেন।। ১।।
ভাবার্থঃ আশয় এই হয় যে তৃণ হইতে নিয়ে পরমেশ^র পর্যন্ত যে পদার্থ সংসারের স্থিতির কারণ, তাহার সব তত্ত্বজ্ঞান (বাচস্পতিঃ) বেদ বাণীর স্বামী সর্বগুরু জগদীশ্বরের কৃপা হইতে সব মনুষ্য বেদ দ্বারা প্রাপ্ত করে আর ওই অন্তর্যামী উপর পূর্ণ বিশ্বাস করে পরাক্রমী আর পরপোকারী হয়ে সদা আনন্দ ভোগ করেন।। ১।।
ঋষিঃ-অথর্বা।। দেবতা-বাচস্পতিঃ।। ছন্দঃ-অনুষ্টুপ্।।
পুনরেহি বাচস্পতে দেবেন মনসা সহ।
বসোষ্পতে নিরময় ময্যেবাস্তু ময়ি স্রুতম্।। ২।।
মন্ত্রার্থঃ (বাচস্পতে) হে বাণীর স্বামী পরমেশ্বর! তুমি (পুনঃ) বারবার (এহি) এসো (বসোঃ পতে) হে শ্রেষ্ঠ গুণের রক্ষক! (দেবেন) প্রকাশময় (মনসা সহ) মনের সাধ (নি) নিরন্তর (রময়) [আমাকে] রমন করা, (ময়ি) আমার মধ্যে বর্ত্তমান (শ্রুতম্) বেদ বিজ্ঞান (ময়ি) আমার মধ্যে (এব) ই (অস্তু) থাকে।। ২।।
ভাবার্থঃ মনুষ্য প্রযত্ন পূর্বক (বাচস্পতি) পরম গুরু পরমেশ্বরের ধ্যান নিরন্তর করতে থাকে আর সবসময় স্মরণের সাথে বেদ বিজ্ঞান হইতে নিজের হৃদয়কে শুদ্ধ করে সদা সুখ ভোগ করেন।। ২।।
ঋষিঃ-অথর্বা।। দেবতা-বাচস্পতিঃ।। ছন্দঃ-অনুষ্টুপ্।।
ইহৈবাভি বিতনূভে আত্না ইব জ্যয়া।
বাচস্পতির্নি য়চ্ছতু ময্যেবাস্তু ময়ি শ্রুতম।। ৩।।
মন্ত্রার্থঃ (ইহ) এর উপর (এব) ই (অগ্নি) চারদিক হইতে (বিতনু) তুমি সুন্দর প্রকার বিস্তার, (ইব) যেরূপ (উভে) দুই (আত্নীং) ধনুষ খড়গে (জ্যয়া) জয়ের সাধন, চিতকারের সাথে [শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়] (বাচস্পতিঃ) বাণীর স্বামী (নিয়চ্ছতু) নিয়মে রেখে (ময়ি) আমার মধ্যে বর্ত্তমান (শ্রুতম্) বেদ বিজ্ঞান (ময়ি) আমার মধ্যে (এব) ই (অস্তু) থাকে।। ৩।।
ভাবার্থঃ যেরূপ সংগ্রামে শূরবীর ধনুষের দুই খড়গের দড়িতে লাগিয়ে বাণ দ্বারা রক্ষা করেন, ওই প্রকার আদিগুরু পরমেশ^র নিজের কৃপাযুক্ত দুই হাতের [অর্থাৎ অজ্ঞানের হানি আর বিজ্ঞানের বৃদ্ধিকে] ইহা আমাকে ব্রহ্মচারীর উপর বিস্তার করে রক্ষা করেন আর নিয়ম পালনে দৃড় করে পরম সুখদায়ক ব্রহ্মবিদ্যার দান করেন আর বিজ্ঞানের সব স্মরণ আমার মধ্যে থাকে।। ৩।।
ঋষিঃ-অথর্বা।। দেবতা-বাচস্পতিঃ।। ছন্দঃ-অনুষ্টুপ্।।
উপহুতো বাচস্পতিরুপাস্মান্ বাচস্পতির্হুয়াতাম।
সং শ্রুতেন গমেমহি মা শ্রুতেন বিরাধিষি।। ৪।।
মন্ত্রার্থঃ (বাচস্পতিঃ) বানীর স্বামী, পরমেশ্বরের (উপহুতঃ) নিকট আহ্লান করছি, (বাচস্পতিঃ) বাণীর স্বামী (অস্মান্) আমাদেরকে (উপহৃয়তাম্) নিকট ডাকবে। (শ্রুতেন) বেদ বিজ্ঞান দ্বারা (সংগমেমহি) আমরা মিলেমিসে থাকব। (শ্রুতেন) বেদ বিজ্ঞান হইতে (মা বিরাধিষি) আমি আলাদা না হয়ে যাই।। ৪।।
ভাবার্থঃ ব্রহ্মচারী লোক পরমেশ্বরের আহ্বান করে নিরন্তর অভ্যাস আর সৎকার হইতে বেদাধ্যয়ন করে যার দ্বরা প্রীতি পূর্বক আচার্য পড়াবে ব্রহ্মবিদ্যা তাহার হৃদয়ে স্থিত হয়ে যথাবত উপযোগী হবেন।। ৪।।
ভাষ্যঃ প-িত ক্ষেমকরণদাস ত্রিবেদী
।। ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি।।
মন্তব্যসমূহ